বাঙালি সত্তা ও স্মৃতির যে বিস্তার পরম্পরা ও ধারাবাহিকতা, আবহমান সেই জীবনধারা উপন্যাসে রূপায়ণ কোনো সহজ কাজ নয়। দুরূহ সেই দায়িত্ব পালনে শিল্পযাত্রায় ব্রতী হয়েছেন চৌধুরী খালেকুজ্জামান। এক যুগের নিষ্ঠাবান শ্রম, সাধনা ও কল্পনার মিলন ঘটিয়ে নিবেদন করেছিলেন 'আবহমান' ট্রিলোজির প্রথম খণ্ড "ত্রিস্রোতা। ইতিহাসের প্রতি অনুগত সাহিত্যসাধনা যে মহাকাব্যিকতা দাবি করে তা মেটাতে পরাঙ্মুখ নন লেখক, আর তাই পরবর্তী এক দশকের শ্রমের ফসল হিসেবে নিবেদন করলেন ট্রিলোজির দ্বিতীয় খণ্ড ‘ধ্রুবতারা’ । বাঙালির মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল এক অনন্য বিস্তার নিয়ে, দেশের ভেতরে বাইরে, ভারতে বহির্বিশ্বে, অসংখ্য কুশীলব সমন্বয়ে নির্মমতা নিষ্ঠুরতা প্রতিরোধ ও আত্মদানের মহিমায় গ্রন্থিত সে-কাহিনির পরিচয়-দান দুঃসাধ্য। অজস্র চরিত্র নিয়ে বহু ঘটনাধারার মধ্য দিয়ে ইতিহাসের সত্যরূপ ধারণে প্রয়াসী হয়েছেন লেখক । ঐতিহাসিক তথ্য ও জীবন-বাস্তবতার মিশেলে উপন্যাসের এমন বয়ান প্রায় তুলনারহিত। মুক্তিযুদ্ধের এপিক উপস্থাপন হিসেবে গণ্য হবে 'ধ্রুবতারা', যা 'ট্রিলোজির অংশ হিসেবে পেয়েছে বিশেষ সার্থকতা।