অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষদিকে তুলনামূলক-ঐতিহাসিক ভাষাবিজ্ঞানের জন্ম উইলিয়াম জোন্সের হাত ধরে। জোন্সের পর্যবেক্ষণের সূত্র ধরেই পরবর্তীকালের গবেষণার ফল ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাতত্ত্ব। সমগ্র ঊনবিংশ শতাব্দী জুড়ে ইউরোপে বিশেষ করে জার্মানিতে এই চর্চার প্রভূত অগ্রগতি হয়। ভাষাবংশ, প্রত্নভাষা, পুনর্গঠন, তুলনামূলক পদ্ধতি, ধ্বনিপরিবর্তনের সূত্র, ঐতিহাসিক বাক্যতত্ত্ব প্রভৃতি ধারণা বিকাশ লাভ করে বস্তুত ইন্দো-ইউরোপীয় চর্চার হাত ধরেই। বিংশ শতাব্দীর গোড়া থেকে ভাষাবিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণের ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে গেছে। বেশ কিছুটা স্তিমিত হয়ে পড়েছে ইন্দো-ইউরোপীয় চর্চা। তবে আজও এই চর্চা-গবেষণা তার প্রাসঙ্গিকতা হারায়নি। বর্তমান গ্রন্থ ইন্দো-ইউরোপীয় চর্চার ইতিহাস নয় বরং প্রত্ন ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষার পরিচয়। কেমন ছিল প্রত্নভাষার গঠন বিন্যাসটি। কে কীভাবে পুনর্গঠন করার চেষ্টা করেছেন এর অবয়বকে। কেনই বা উত্তরসূরীদের মধ্যে পুরোপুরি রক্ষিত হল না প্রত্নভাষার সংগঠনটি। এইসব প্রশ্নের সম্ভাব্য উত্তর খোঁজা হয়েছে এই গ্রন্থে। সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে প্রত্নভাষার কন্যাদের এবং ‘ভাষাপ্রত্নবিদ্যা’র একটি প্রাথমিক পরিচয়।