কথাসাহিত্যে সুচিত্রা ভট্টাচার্য প্রভূত খ্যাতির অধিকারী। আকস্মিক বিদায়লগ্নের সময়েও তিনি ছিলেন সৃজনমগ্ন এবং ব্যাপক জনাদরের বৃত্তে। মোটামুটি বাইশ বছরের ঔপন্যাসিক জীবনে তিনি লিখেছেন অজস্র। নানাভাবে কাঁটা-ছেড়া করেছেন সমকালের অন্তর। আলোড়ন সৃষ্টিকারী এক-একটি উপন্যাসে সুচিত্রা বিনা দ্বিধায় ছিন্ন করেছেন আমাদের সামাজিক মুখোশ। তীব্র সব নারীচরিত্র সৃষ্টি করেছেন। নারীসুলভ সংবেদন তাঁকে স্বতন্ত্র করলেও প্রকৃত অর্থে তিনি কিন্তু ছিলেন মানবতাবাদী সাহিত্যিক। মধ্যবিত্ত জীবনের সমস্যা-সংকট-প্রতিজ্ঞা-প্রতিবাদ-আত্মদহনের পাশাপাশি সুচিত্রার নজর এড়ায়নি নাগরিক সমাজের নানারকম বিচ্ছিন্নতা ও নিঃসঙ্গতা। প্রত্যক্ষভাবে বিষয়কে চিনতেন বলেই তাঁর কাহিনি চেনা দিয়ে যায় পাঠককে বারবার। ‘উপন্যাস সমগ্র’ দ্বিতীয় খণ্ডে গ্রন্থিত হল বারোটি উপন্যাস—হেমন্তের পাখি, ঢেউ আসে ঢেউ যায়, ধূসর বিষাদ, গভীর অসুখ, অনিকেত, ভাল মেয়ে খারাপ মেয়ে, শেষবেলায়, পরবাস, নন্দিনী, ফাঁকি, চেনা মুখ অচেনা মুখ, সহেলি।