মহাবিশ্ব অনেক বড়। কিন্তু কতো বড় তা কী আমরা জানি? মহাবিশ্বের উদ্ভব কীভাবে ও কোথেকে হয়েছে এবং এর পরিণতিই বা কী-সেই সম্পর্কে ধারণা পেতে হলে মহাবিশ্বের বর্তমান আকৃতি নিয়ে আলোচনা করা প্রয়োজন। একইসঙ্গে মহাবিশ্বের বয়সও জানতে হবে। প্রথমে মহাবিশ্ব কত বড়, তা খানিকটা আলোকপাত করতে চাই। আমাদের আবাসভূমি 'পৃথিবী' একটি গ্রহ। এরকম নয়টি গ্রহ রয়েছে আমাদের সৌরজগতে। আর এই সৌরজগতের মধ্যমণি 'সূর্য' একটি নক্ষত্র। সূর্যের মতো অথবা সূর্য থেকে বড় কিংবা ছোট প্রায় শত বিলিয়ন নক্ষত্র নিয়ে গঠিত হয়েছে গ্যালাক্সি মিল্কিওয়ে। মহাবিশ্বে এরকম গ্যালাক্সি রয়েছে দশ বিলিয়ন। উপর্যুক্ত তথ্যের মাধ্যমেও কিন্তু মহাবিশ্বের বিশালত্ব আমাদের নিকট স্পষ্ট হয় নি। পর্যবেক্ষণে দেখা যায় নক্ষত্ররা পরস্পর থেকে অনেক দূরে দূরে অবস্থান করছে। আবার গ্যালাক্সিগুলোর মধ্যবর্তী দূরত্ব আরও অনেক বেশি। এতো বেশি যে, তা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে রীতিমতো অভাবনীয়। যেমন গ্যালাক্সি মিল্কিওয়ে'র নিকটতম প্রতিবেশী গ্যালাক্সি এনড্রোমিডার দূরত্ব বিশলাখ আলোকবর্ষ। আলোর গতি প্রতিসেকেন্ডে তিনলাখ কিমি। এই হিসেবে আলো এক বছরে যে দূরত্ব যেতে পারে তা-ই আলোকবর্ষ এবং আলো এক মিনিটে যে দূরত্ব যেতে পারে, তাকে বলা হয় আলোক মিনিট। তেমনি করে আলো প্রতি ঘণ্টায় ও সেকেন্ডে যে দূরত্ব যায় তাকে যথাক্রমে আলোক ঘণ্টা এবং আলোক সেকেন্ড বলা হয়। আবার আলো এক সেকেন্ডের একহাজার ভাগের এক ভাগ সময়ে মানে এক মিলিসেকেন্ডে যে দূরত্ব অতিক্রম করে, তাকে আলোক মিলিসেকেন্ড বলা হয়। উল্লেখ্য সেকেন্ডে তিনলাখ কিমি বেগে এক আলোক মিলিসেকেন্ডে যায় তিনশ' কিমি। সুতরাং আলোর গতিসম্পন্ন কোনো রেলগাড়ি আমাদের চোখের পলকে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যেতে সক্ষম হবে। এদিকে এক আলোকবর্ষ প্রায় সাড়ে নয় লক্ষ কোটি কিলোমিটারের সমান।