মানবসভ্যতার ঊষাকাল থেকে আজ পর্যন্ত ঘটে চলেছে যুদ্ধ। যুদ্ধ মানবসমাজের আপন কর্মের ফলে অর্জিত এক মহাপাপ। পাণ্ডব-কৌরবদের মধ্যে সংঘটিত কুরুক্ষেত্রের আঠারো দিনের যুদ্ধ তেমনই একটা প্রাচীনকালের ভয়ংকর বিধ্বংসী মহাযুদ্ধ। ‘কুরুক্ষেত্র: আঠারো দিনের যুদ্ধ’ গ্রন্থটিতে মহাভারতের কুরুক্ষেত্র পর্ব প্রাঞ্জল ভাষায় পরিবেশিত ও বিশ্লেষিত। অন্তরে-বাহিরে অন্ধ ধৃতরাষ্ট্রের দোলাচলচিত্ততা, অভিমানী দুর্যোধনের উগ্র-সাম্রাজ্যবাদ, যুধিষ্ঠিরের দ্যূতাসক্তি, সর্বোপরি রাজকুলবধূ দ্রৌপদীর প্রকাশ্য রাজসভায় চরম শ্লীলতাহানি- সবকিছু মিলে অমোঘভাবে ঘটিয়ে দিল এই মহাযুদ্ধ। ফলস্বরূপ একে একে বিদায় নিলেন কুরুবৃদ্ধ পিতামহ ভীষ্ম, উভয়পক্ষের অস্ত্রশিক্ষাগুরু দ্রোণাচার্য, নিয়তিতাড়িত অভিশপ্ত কর্ণ, জয়দ্রথ, শল্য, বীরকিশোর অভিমন্যু, শিখণ্ডী, ধৃষ্টদ্যুম্ন, দুরাচারী দুঃশাসন, ক্ষাত্র তেজের দীপ্ত তারকা দুর্যোধন এবং আরও অনেকে। রচিত হল কুরুক্ষেত্রের মহাশ্মশান, সেখানে শোনা গেল স্বামীহারা কিশোরী উত্তরা, দুঃশলা ও অন্যান্যদের হৃদয়বিদারক বিলাপ। গান্ধারী ও দ্রৌপদী পরস্পরের মুখোমুখি হলেন- কে কাকে সান্ত্বনা দেবেন? উভয়েই সর্বপুত্রহারা।