চল্লিশ বছর আগে পুণ্যশ্লোকের সঙ্গে মাত্র একবার দেখা হয়েছিল সুবর্ণার। তারপর এই মধ্যবর্তী সময়ে ঘটে গিয়েছে অনেক কিছু। পুণ্যশ্লোক এখন বিপত্নীক। তাঁর দুই কন্যা বিবাহিতা। একমাত্র পুত্র চাকরিসূত্রে দূরপ্রবাসে। কলকাতায় পিতৃপুরুষের পুরনো বাড়িতে পুণ্যশ্লোক আজ নিঃসঙ্গ। এই একাকী মুহূর্তে সুবর্ণার সঙ্গে তাঁর দেখা হয়ে যায়। অবিবাহিতা স্কুলশিক্ষিকা সুবর্ণাও একা। পুণ্যশ্লোকের প্রস্তাবে সে প্রথমে রাজি হয়নি। জীবনের পড়ন্তবেলায় দুটি নারী-পুরুষের একসঙ্গে থাকার অঙ্গীকার চারপাশের মানুষজন সহজে মেনে নেয়নি। কিন্তু তাঁর নির্ভীক সিদ্ধান্ত থেকে একচুলও সরে আসেন পুণ্যশ্লোক। অনেক যুদ্ধের পর অবশ্য সুবর্ণাও উপলব্ধি করে—একা থাকার ফাঁকা অভিমান শেষ পর্যন্ত শূন্যতা আর দীর্ঘশ্বাস ছাড়া কিছুই নয়। এরপর জীবনের উপান্তে পৌঁছে কুশপাতা গ্রামে এসে নতুন করে আর এক জীবন শুরু করলেন পুণ্যশ্লোক। বিবাহ নয়, সুবর্ণার সঙ্গে মৃত্যু পর্যন্ত এক সহজীবনযাপনের সাহসী পদক্ষেপ। একটি আড়াইশো বছরের প্রাচীন দেবদেউল প্রতীক হয়ে ওঠে পুণ্যশ্লোক ও সুবর্ণার জীবনে। তবে সময় বড় নিষ্ঠুর। সে অনেক কিছুই ছিনিয়ে নেয়। কিন্তু কেন? তারই কথা হর্ষ দত্তের এই নতুনমাত্রার উপন্যাসে।