মহত্তর জীবন বিকাশের ছবিতে আকীর্ণ রমন্যাস ‘ছায়াপথের পথিক’। মহৎ জীবন মানে অবাস্তব জীবন নয়, যদিও সে-জীবনের স্পর্শ প্রতি পদক্ষেপে অনুভব করা যায় না। এই উপন্যাসে কয়েকটি মহৎ জীবনবিকাশের ছবি অনুপম রঙে-রসে ও ঘাত-প্রতিঘাতের পরম্পরায় চিত্রিত করেছেন লেখক। এই রমন্যাস লেখার অনুপ্রেরণার কেন্দ্রবিন্দু লেখকের প্রিয়তম বন্ধু যোগী কৃষ্ণপ্রেম। আর আছেন তাঁর যোগদীক্ষা গুরু শ্রীঅরবিন্দ। নানা সংশয় ও অন্তর্দ্বন্দ্বে এঁদের প্রজ্ঞা ও স্বজ্ঞা লেখককে কতখানি আলোকিত করেছে তার অকুন্ঠ বর্ণনা এই উপন্যাসের প্রতি পাতায়। নানাস্থানে কল্পনার মিশেল থাকলেও সর্বত্রই সত্যকথনের ঝঙ্কার সত্যসন্ধানীরা উপলব্ধি করবেন। বিশ্বপথিক যেসব চিরপ্রণম্য তীর্থযাত্রীরা বাস্তব ও ইতিহাস থেকে উঠে এসেছেন এই কাহিনিতে, তাঁদের চরিত্রচিত্রণে কল্পনার ছোঁয়া এই উপন্যাসকে রসোত্তীর্ণ করেছে। মানবাত্মার গভীরতম তথা বিচিত্রতম উপলব্ধির স্তরগুলি অপূর্ব কুশলতায়, তর্ক-বিতর্কে এবং উত্তর-প্রত্যুত্তরের মতো সাজিয়ে রচিত হয়েছে ‘ছায়াপথের পথিক’। গভীর জীবনদর্শন, ধর্মসারতত্ত্ব, যোগব্যাখ্যা এবং পরমাত্মিক জগতের বিশ্লেষণ সত্ত্বেও গল্পরসে জারিত এই রমন্যাসের প্রধান আকর্ষণ— দুর্নিবার আনন্দ।