মাঝেমধ্যেই খেলা নিয়ে লেখেন, না কিন্তু কখনই খেলা-খেলা লেখা লেখেন না মতি নন্দী। খেলার মাঠ তাই তাঁর গল্প-উপন্যাসে আক্ষরিক অর্থে হয়ে থাকে না নির্দিষ্ট সীমানা-ঘেরা এক চৌহদ্দি। তাঁর সম্পন্ন, সংবেদনশীল কলমে বৃহত্তর জগতেরই এক প্রতীক খেলার জগৎ, বিশেষ জীবনের ধারা যেখানে মিশে যায় অনন্ত জীবনের স্রোতে। এই মহাজীবন-স্রোতেরই এক আবর্তময় কাহিনী ‘জীবন অনন্ত’। আপাতভাবে মনে হতে পারে, অসামান্য এই উপন্যাসের কেন্দ্রীয় দুই চরিত্রের নামেই এই নামকরণ। কিন্তু সানন্দ বিস্ময়ের কথা এই যে, অন্যতর ও মহত্তর এক ব্যঞ্জনাও যে সার্থকরূপে সঞ্চারিত এই নামে, শেষাবধি তা অগোচর থাকে না। অন্য অনেক লেখায় যেমন, এখানেও তেমনই, মতি নন্দীর অভিপ্রায়, মানুষের তথা মানব-সভ্যতা ও সংস্কৃতির অগ্রগমনের, লক্ষ্য-অর্জনের দুর্মর সংকল্পের দুর্লভ ছবিটিকে ফুটিয়ে তোলা। কিন্তু করুণরঙীন যে-কাহিনীটি হাসিকান্নার হিরাপান্না দিয়ে এইসূত্রে গেঁথেছেন মতি নন্দী, তার তুলনা বস্তুতই বিরল।