সকল বই

নদীভিত্তিক বাংলা উপন্যাস ও কৈবর্তজনজীবন

নদীভিত্তিক বাংলা উপন্যাস ও কৈবর্তজনজীবন

Author: হরিশংকর জলদাস
Delivery Time: 3-7 Days , Cash on Delivery Available
  • বই উপহারঃ বই উপহারঃ
    বিস্তারিত
  • বই উপহার.. বই উপহার..
    বিস্তারিত
  • কম্বো অফারঃ কম্বো অফারঃ
    বিস্তারিত
  • কম্বো অফার.. কম্বো অফার..
    বিস্তারিত
  • ফ্রি ডেলিভারিঃ ফ্রি ডেলিভারিঃ
    বিস্তারিত
Price: ৳600.00 ৳ 510.00 (15.00 % off)
Available Stock
+ Add to Wishlist
Publisher কথা প্রকাশ
ISBN9789845101691
Edition2021 Mar 04
Pages288
Reading Level General Reading
Language Bangla
PrintedBangladesh
Format Hardbound
Category প্রবন্ধ-গবেষণা
Return Policy

7 Days Happy Return

ভারতবর্ষীয় সমাজে মানুষের সঙ্গে মানুষের যে সম্পর্ক,  দীর্ঘকাল ধরেই তা মোটা দাগে দু’ভাগে বিভক্ত। এক. সেবাগ্রাহী এবং দুই. সেবাদাস। অমানবিক বর্ণবিভাজনের কারণে উৎপাদনশীলতার মূলভিত্তিতে শ্রমের জোগান দেওয়া সত্ত্বেও কৈবর্তরা সেবাদাসের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। ছোটজাতের দোহাই দিয়ে, অস্পৃশ্যতার অজুহাত দেখিয়ে এই সম্প্রদায়টিকে সমাজের একপ্রান্তে ঠেলে দেওয়া হয়েছে, তাই তারা হয়েছে প্রান্তজন। কিন্তু সমাজ চলিষ্ণু। পাশ্চাত্য শিক্ষার সংস্পর্শে, মানবতাবাদী চেতনার অনুপ্রেরণায় বাঙালি কথাসাহিত্যিকরা এগিয়ে এলেন ব্রাত্য প্রান্তজনদের জীবনকাব্য নির্মাণে। তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় (১৮৯৮-১৯৭১), সতীনাথ ভাদুড়ী (১৯০৬-১৯৬৫), মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় (১৯০৮-১৯৫৬) প্রমুখ সাহিত্যিক  এই মানবতাবাদী ধারার অন্যতম পুরোধা। বাংলা সাহিত্যে ১৯৩৬ থেকে ২০০১ সাল অবধি কৈবর্তসমাজলগ্ন উল্লেখযোগ্য উপন্যাস রচিত হয়েছে এগারোটি। এদের মধ্যে পাঁচটি উপন্যাসে কৈবর্তজীবন তার সকল-প্রকার রূপবৈচিত্র্য নিয়ে হাজির হয়েছে। এই উপন্যাসগুলো হলো মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (১৯০৮-১৯৫৬) ‘পদ্মানদীর মাঝি’ (১৯৩৬), অদ্বৈত মল্লবর্মণের (১৯১৪-১৯৫১) ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ (১৯৫৬), সমরেশ বসুর (১৯২৪-১৯৮৮) ‘গঙ্গা’ (১৯৫৭), সাধন চট্টোপাধ্যায়ের (১৯৪৪- ) ‘গহিন গাঙ’ (১৯৮০) এবং ঘনশ্যাম চৌধুরীর (১৯৫৭-) ‘অবগাহন’ (২০০০)। উক্ত পাঁচজন লেখক ৬৪ বছরের (১৯৩৬-২০০০) কৈবর্তজীবনের চালচিত্রকে উপস্থাপন করেছেন তাঁদের উপন্যাসসমূহে। হরিশংকর জলদাস অর্জিত জ্ঞান ও সহজাত-অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে উল্লিখিত পাঁচটি উপন্যাসকে বিশ্লেষণ করে কৈবর্তজীবনবৃত্তকে উন্মোচিত করবার প্রয়াস পেয়েছেন এই গ্রন্থে। জেলেদের দারিদ্র্য, তাদের অশিক্ষা, জীবন-জীবিকার ধরন, প্রতারণা-শোষণ, কলহ-কলরব, উৎসব-সংস্কার, অর্থনৈতিক বিপন্নতার বিষয়গুলো নানা দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করেছেন লেখক। ভারতবর্ষীয় সমাজব্যবস্থায় কৈবর্তজনগোষ্ঠী যে আসলে অপাঙ্ক্তেয় নয়, সমাজকাঠামোর অপরিহার্য খুঁটি-তাও নানা যুক্তি-উদাহরণ দিয়ে প্রমাণ করেছেন লেখক এই গ্রন্থে। হরিশংকর জলদাসের দৃষ্টিভঙ্গি স্বচ্ছ, বক্তব্য যুক্তিনির্ভর। তাঁর বিশ্লেষণে চিন্তার গভীরতা। তাঁর নদীভিত্তিক বাংলা উপন্যাস ও কৈবর্তজনজীবন গ্রন্থটি সাহিত্যানুরাগী পাঠক ও গবেষকদের অজানা কৌতূহল পূরণে সক্ষম হবে বলে আশা করা যায়। 

Authors:
হরিশংকর জলদাস

প্রখ্যাত ঔপন্যাসিক হরিশংকর জলদাস ১৯৫৫ সালের ১২ই অক্টোবর বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের উত্তর পতেঙ্গা গ্রামের এক জেলে পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা যুধিষ্ঠির জলদাস পেশায় ছিলেন একজন জেলে। ফলে আর্থিক অভাব অনটন আর অর্থনৈতিক টানাপোড়েনই ছিল হরিশংকরের বেড়ে ওঠার সঙ্গী। হরিশংকর জলদাসের শৈশব-কৈশোর কাটে পতেঙ্গার কৈবর্তপাড়ায়। তার বাবার স্বপ্ন ছিল ছেলেকে জেলের জীবনযুদ্ধে না জড়িয়ে শিক্ষিত করবেন যেন ছেলে সম্মানের জীবনযাপন করতে পারে। হরিশংকরের প্রাথমিক শিক্ষাজীবন শুরু হয় দেবেন্দ্রলাল দে’র আদাবস্যার নামের এক পাঠশালায়। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নিতে তিনি ভর্তি হন পতেঙ্গা বোর্ড প্রাইমারি স্কুলে। ১৯৭১ সালে পতেঙ্গা হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক পাস করেন। চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক সম্পন্ন করেন তিনি। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ পাস করে বাবার স্বপ্ন পূরণে আরো একধাপ এগিয়ে যান হরিশংকর। 'জাইল্যা' ঘরের সন্তান বলে তাকে বিভিন্ন সময়ে অপমানিত হতে হয়েছে, শুনতে হয়েছে ‘জাওলার ছাওয়াল’ কটুক্তি। সেই কথার উচিত জবাব দিতে তিনি ২০০৭ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে ‘নদীভিত্তিক বাংলা উপন্যাস ও কৈবর্ত জনজীবন’ বিষয়ে গবেষণা করে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। এখানে তিনি জেলেদের জীবনের সকল আনন্দ-বেদনা, উৎপত্তি-বিকাশ, তাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক জীবন ইত্যাদি তুলে ধরেন। পেশাগত জীবনে হরিশংকর জলদাস চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান। কিন্তু কর্মজীবনের শুরুতে অভাবের দিনগুলোতে তিনি দিনে শিক্ষকতা এবং রাতে বাবার সাথে সমুদ্রে মাছ ধরতে যেতেন। ৪৭ বছর বয়সে তিনি তার প্রথম উপন্যাস ‘জলপুত্র’ লেখেন। এরপর, ক্রমাগত বাজারে আসতে থাকে হরিশংকর জলদাসের নতুন বই। হরিশংকর জলদাসের বইগুলোতে সবসময়ই উঠে এসেছে নিপীড়িত, প্রান্তিক এবং নিচুতলার মানুষের কথা। হরিশংকর জলদাসের উপন্যাসসমগ্র সমৃদ্ধ হয়েছে ‘আমি মৃণালিনী নই’, ‘হৃদয়নদী, ‘রামগোলাম’, ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’ ইত্যাদি চমৎকার উপন্যাসের মাধ্যমে। হরিশংকর জলদাসের ছোটগল্প ‘লুচ্চা’, ‘জলদাসীর গল্প’, ‘মাকাল লতা’ প্রভৃতিও পাঠকপ্রিয়। এছাড়া দুটি আত্মজীবনী রচনা করেছেন তিনি। ‘কসবি’, ‘দহনকাল’, ‘জলপুত্র’ হরিশংকর জলদাস এর সেরা বই। মধ্যবয়সে লেখা শুরু করলেও সাহিত্যকর্মে নতুন মাত্রা যোগ করায় তিনি বহু পুরস্কার অর্জন করেছেন। ২০১১ সালে ‘প্রথম আলো বর্ষসেরা পুরস্কার’ (দহনকাল), ২০১৩ সালে ‘আলাওল সাহিত্য পুরস্কার’ (জলপুত্র), ‘ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কার’ (প্রতিদ্বন্দ্বী), ‘বাংলা অ্যাকাডেমি পুরষ্কার’, ‘সিটি আনন্দ আলো পুরস্কার’ সহ ভাষা ও সাহিত্যে অবদানের জন্য ২০১৯ সালে তিনি পেয়েছেন ‘একুশে পদক’।

0 review for নদীভিত্তিক বাংলা উপন্যাস ও কৈবর্তজনজীবন

Add a review

Your rating