আঠারো শতকের শুরুর দিকে নারী পুরুষের সমান অধিকারের ধারণাটি প্রথম উঠে আসে। নারীবাদী আন্দোলনের সত্যিকারের সূচনা হয় ১৮৪৮ সালে। প্রথম যুগের নারীবাদী আন্দোলন শুরু হয়েছিল শিক্ষা এবং ভোটের অধিকার আদায় করার জন্যে। যা বিশ শতকে এসে যুক্তরাষ্ট্রে নারীদের ভোটাধিকার প্রদানের মাধ্যমে পূর্ণতা পায়। ১৯৬০ সালে সমানাধিকার আন্দোলন আরো জোরদার হতে থাকে এবং নতুন ডাইমেনশন লাভ করে যার নাম দেয়া হয় সেকেন্ড ওয়েভ অফ ফেমিনিজম দ্বিতীয় যুগের নারীবাদী আন্দোলন। এই সময়ে এসে সমান অধিকার আন্দোলনের সাথে ধর্ম বিষয়টি জড়িয়ে পড়ে। নারীবাদীদের বক্তব্য এবং লিখা থেকে এটা স্পষ্ট হয় যে সমাজের প্রাচীন এবং শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ধর্ম মূলত পিতৃতন্ত্রের প্রতিনিধিত্ব করে। ধর্মের অনেক নিয়ম কানুন-ই নারী-পুরুষের বৈষম্য তৈরির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। নারীবাদের অগ্রগতির সাথে সাথে মেয়েরাও তাদের অধিকার সম্পর্কে আগের চেয়ে অনেক বেশি সচেতন হয়ে উঠেছে। বেশিরভাগ সচেতন মেয়েদের মতে ধর্মীয় অনেক বিধি নিষেধ সমাজে অবস্থিত বৈষম্যকে আরো প্রগাঢ় করে। তাই নারীবাদীরা ধীরে ধীরে হয়ে উঠে ধর্মবিরোধী। কখনো কখনো তাদেরকে মনে করা হয় সমাজ বিচ্ছিন্ন। এই বইটি লিখার উদ্দেশ্য হলো সমাজে এমন একটি প্লাটফর্ম তৈরি করা যাতে নারীরা সমাজের মধ্যে থেকেও নিজেদেরকে বিচ্ছিন্ন মনে না করে। যেখানে মেয়েরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ধর্মীয় ও সামাজিক সকল দায়িত্ব পালন করতে পারে।