তিমিরের দিনযাপনে অপ্রত্যাশিত ধাক্কা দিয়ে শ্রুতি নিজের পায়ে দাঁড়াতে চায়। শ্রুতির দিদি শ্রেয়সী সন্তানহীনতার যন্ত্রণায় দীর্ণ। তার অধ্যাপক স্বামী সুগত নিজের জগতে আত্মমগ্ন। শ্রেয়সী ও সুগতর দাম্পত্য-সম্পর্ক দূরত্ব অতিক্রম করে আন্তরিক, গভীর বন্ধনে ক্রমশ জড়িয়ে যেতে থাকলেও শ্রুতি এবং তিমিরের সম্পর্ক মেরামত হয় না। তিমির তার একসময়ের অভিন্নহৃদয় বন্ধু কণাদের থেকে বিচ্ছিন্ন। তিমিরের জীবন জড়িয়ে যায় অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় জয়দীপের সঙ্গে। রোগাক্রান্ত বাবার জন্য স্বেচ্ছানির্বাসনে বন্দি অবন্তিকাও নিঃসঙ্গতায় জর্জরিত। জয়দীপ, কণাদ, অবন্তিকা ও সুগতর সংস্পর্শ ঘরকুনো, আত্মকেন্দ্রিক তিমিরকে নিজস্ব বৃত্তের বাইরে এনে দাঁড় করায়। বন্ধুত্ব ও সম্পর্কের উষ্ণতা ফিরে পায় তিমির। অনুভব করে জীবনের প্রতিটি মুহূর্তই আসলে একপ্রকার প্রস্তুতি। শূন্যস্থান পূরণের বদলে দায়িত্বের অঙ্গীকারে উত্তরণ ঘটে তিমিরের। তবুও কারও কারও জীবনে শূন্যতা থেকেই যায়। হয়তো সময় নতুনভাবে প্রস্তুত করে সবাইকে, উত্তরণের পরীক্ষায় সফল হওয়ার চাবিকাঠি থাকে ভবিষ্যতের গর্ভে। সুমন মহান্তির ‘প্রস্তুতিপর্ব’ উপন্যাসে এক গাঢ় অনুভব— ‘আত্মসুখ নয়, দায়বদ্ধতাই দাবি করে জীবন’।