‘‘কবিদের কোনো জীবনী হয় না। তাঁদের কর্মই তাঁদের জীবনী। পেসোয়া, যিনি এই পৃথিবীর বাস্তবতাকে সবসময় সন্দেহের চোখে দেখতেন, এই অভিমতকে মেনে নেবেন যদি সব ধরনের জীবনের ঘটনা এবং দুর্ঘটনাকে আমরা ভুলে গিয়ে তাঁর কবিতায় প্রবেশ করি। তাঁর জীবনে আশ্চর্যের কিছুই নেই, কোনোকিছুই নেই, শুধু কবিতা ছাড়া। তাঁর জীবনের ইতিহাস থেকে তাঁকে বোঝারও কিছু আছে বলে আমি মনে করি না। আমি বাধ্য হয়েই এই অপ্রীতিকর শব্দটি ব্যবহার করছি। তাঁর কবিতার আলোয় জীবনের ইতিহাস আর তা থাকে না। পেসোয়া শব্দের পর্তুগিজ অর্থ ব্যক্তি, যা এসেছে পারসোনা থেকে, যা বোঝাত রোমান অভিনেতাদের মুখোশ। মুখোশ মানে আখ্যানের এক চরিত্র, অন্য কিছু নয় : স্বয়ং পেসোয়া। তাঁর ইতিহাস হ্রাস পেয়ে দৈনন্দিন জীবনের অবাস্তবতা আর তাঁর আখ্যানের বাস্তবতার মাঝখানে থেকে যায়। এই আখ্যান হলো কবি আলবের্তো কায়েইরু, আলভারু দ্য কাম্পুস, রিকার্দো রাইশ আর সর্বত স্বয়ং ফের্নান্দো পেসোয়া।’’
অক্তাবিয়ো পাস
১৯৯০ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত বিখ্যাত কবি ও প্রাবন্ধিক ‘‘ফের্নান্দো আন্ত্যোনিয়ো নোগেইরা পেসোয়ার জন্ম ১৮৮৮ সালের ১৩ জুন, সাধু আন্থোনির ভোজন দিন ...অনেক শিল্পীর মতো, বরং আরও বেশিমাত্রায়, ফের্নান্দো পেসোয়া বয়স্ক হতে অস্বীকার করেছেন। অনবরতই তিনি বাস করতে থাকেন এক কল্পভাবনার জগতে। অথবা তাকে কি আমরা বলব এক কল্পসাহিত্যেরও জগৎ? বিশ্বাস, শুধু বিশ্বাস ক্লান্ত করত পেসোয়াকে। একজন উত্তম শিল্পীর মতো তিনি তাঁর উর্বর কল্পনাবোধকে কাজে লাগিয়েছেন ঋদ্ধভাবদ্যোতক জিনিস বানাতে তাঁর অভিভূতকারী কবিতা, তাঁর সুন্দর আবর্তিত গদ্য, আর তাঁর অন্যনামীয় জাতি, এসবই ছিল তাঁর মহান কাব্যিক কর্ম।’’
রিচার্ড জেনিথ
বিশিষ্ট পেসোয়া বিশেষজ্ঞ ও অনুবাদক