বাঁশি। বকুল ফুল ট্রিলজির শেষ অংশ। বকুল ফুল বইটি দিয়ে এই ধারাবাহিক সিরিজটির সূত্রপাত। প্রথম উপন্যাস লিখেছিলাম মূলত ব্যথা। সেটি প্রায় আঠারাে হাজার শব্দ পর্যন্ত লেখা ছিল, যখন ব্যথা লিখছিলাম তখন বারবারই মনে হয়েছে সামাজিক ঘরানার দারুণ একটি বই হতে যাচ্ছে এটি; কিন্তু উপন্যাসটি লিখতে গিয়ে তখন এমন কিছু তথ্যের দরকার হয়ে পড়েছিল— যেগুলাে আমি খুব সহজে পাইনি। তথ্যের প্রয়ােজনে, এমনও হয়েছে যৌনপল্লিতে গিয়ে যৌনকর্মীদের সাথে বসে বইটির বিষয়বস্তু নিয়ে বিস্তর আলােচনা করতে হয়েছে। আলােচনায় আবার যেসব তথ্য উঠে এসেছে সেগুলাে নিয়ে তখনই আমি ব্যথা উপন্যাসটাকে গােছানাের জন্য প্রস্তুত করতে পারছিলাম না। কিন্তু আমার লেখার ক্ষুধা পেয়েছিল। ব্যাপকভাবে। এর মাঝেই হঠাৎ একদিন রাতে হাঁটতে বের হয়ে পেয়েছিলাম বকুল ফুলের গন্ধ। এবং সেই গন্ধ কোথা থেকে আসছিল আমি বুঝতে পারছিলাম না, গন্ধের খোজে খোজে অনেক দূর চলে গিয়েছিলাম। যে বাড়িটিতে বকুল গাছটি রয়েছে সেই বাড়িটির সামনে যখন আমি দাঁড়ালাম তখন আমার মনে হলাে এই ফুলের গন্ধ স্বাভাবিক কোনাে গন্ধ নয়। যে ফুলের গন্ধ রাতের অন্ধকারে মানুষকে হাতছানি দেয় সে ফুল কোনাে স্বাভাবিক ফুল হতে পারে না। বাসায় ফিরেই লিখে ফেলি বকুল ফুল বইটির প্রথম পর্ব। লিখতে গিয়ে খেয়াল করলাম আমি অতিপ্রাকৃত ঘরানার প্রেমে পড়ে গেছি। এই প্রেম আমাকে বাধ্য করেছে নয়নতারা, নয়ন। তাহারে পায় না দেখিতের মতাে চমৎকার অতিপ্রাকৃত রহস্যাপন্যাস লিখতে।