ব্রিটিশ জালিমশাহীর জুলুমের নিগড় থেকে স্বাধীনতার সূর্য ছিনিয়ে আনতে জীবনপণ করে যে - সব অমিততেজা সিংহশার্দুল ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন , শাইখুল হিন্দ আল্লামা মাহমুদ হাসান দেওবন্দী এবং আল্লামা সাইয়েদ হুসাইন আহমাদ মাদানী রহ . তাঁদের অন্যতম । রেশমী রুমাল আন্দোলনকে কেন্দ্র করে শাইখুল হিন্দের নামে ষড়যন্ত্র মামলা দায়ের করে ব্রিটিশ রাজপক্ষ । প্রহসনের বিচারে ইউরােপের ভূমধ্যসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্র মাল্টায় নির্বাসনে পাঠানাে হয় । তাঁকে ।
মাওলানা মাদানী প্রাণপ্রিয় উস্তাদের সঙ্গে বরণ করেন স্বেচ্ছাকারাদণ্ড । এ - পর্যন্ত আমাদের অনেকেরই জানা । এরপর অবর্ণনীয় ও অকথ্য নির্যাতনের ভেতর দিয়ে দীর্ঘ তিনটি বছর তাদের সেখানে কাটাতে হয় । ইতিহাসের এ - পর্বটি কিন্তু আমাদের অনেকেরই অজানা । আকাবিরে দেওবন্দের এই চেতনাজাগানিয়া ইতিহাসের অজানা অধ্যায় জানতে পড়ুন । মাল্টার জেলজীবন । শাইখুল ইসলাম মাওলানা সাইয়েদ হুসাইন আহমাদ মাদানী রহ . ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দ মােতাবেক ১২৯৬ হিজরী সালে ভারতের ফয়েজাবাদ জেলার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন ।
স্থানীয় বিদ্যালয়ে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করে ১৩০৯ হিজরীতে দারুল উলুম দেওবন্দে আসেন এবং শাইখুল হিন্দ মাওলানা মাহমুদ হাসান দেওবন্দী রহ . এর কাছে সহীহ বুখারী , সুনানে তিরমিযী ও সুনানে আবু দাউদ পড়ার সৌভাগ্য লাভ করেন । তিনি মাওলানা আবদুল আলী রহ . এর নিকট মুয়াত্তায়ে মালেক , সহীহ মুসলিম , সুনানে নাসায়ী ও সুনানে ইবনে মাজাহ অধ্যয়ন করেন । তিনি ইলমে তাসাওউফ শিক্ষা করেন মাওলানা রশীদ আহমাদ গাঙ্গুহী রহ . এর কাছে ।
১৩১৬ হিজরী সালে তিনি তাঁর পিতা মাস্টার সাইয়েদ হাবীবুল্লাহ সাহেবের সঙ্গে স্বপরিবারে মদীনা মুনাওয়ারায় হিজরত করেন । মােট তেরাে বছর তিনি মসজিদে নববীতে , দুই বছর কলকাতার কওমী মাদরাসায় , সিলেটের কওমী মাদরাসায় এবং দীর্ঘ একত্রিশ বছর দারুল উলুম দেওবন্দে উলূমে হাদীসের খেদমত করার বিরল সৌভাগ্য লাভ করেন ।
পাঁচ বছর । তিনি একাধারে ছিলেন একজন বিদগ্ধ মুহাদ্দিস , মুজাহিদ , রাজনীতিবিদ , সাহিত্যিক ও দায়ীয়ে ইসলাম । সুদীর্ঘ পঞ্চাশ বছর হাদীসে নববী শিক্ষাদান ও বহুমুখী দীনী খেদমত আঞ্জাম দেওয়ার পর ৮২ বছর বয়সে ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দ মােতাবেক ১৩৭৭ হিজরী সালে তিনি ইন্তেকাল করেন ।