এই উপন্যাসের কাহিনির কাল একাদশ শতাব্দী। স্থানের বৃত্ত বিশাল বরেন্দ্রভূমি। তারই দুই ধর্ম-সম্প্রদায়—পাল রাজা আর সাধারণ কৈবর্তরা মুখোমুখি। দ্বন্দ্ব-সংঘাতে পরস্পর সংক্ষুব্ধ। রাজ্যশাসনভার কার করতলগত হবে—শূদ্রদের, না বৌদ্ধদের? ঘটনার এই জটাজালে জড়িয়ে পড়ল কথিত ছোটজাতের কৈবর্তরা। ঘোরতর যুদ্ধে মুখোমুখি হলেন পালরাজা রামপাল আর কৈবর্তরাজ ভীম। রামপালের সহায় চৌদ্দ জন সামন্ত। আর ভীমের সহায় তার পালকপুত্র চণ্ডক। তার শরীরে বহমান বৌদ্ধ রক্ত। তার জন্মসূত্র রহস্যজালে ঘেরা। চণ্ডক গভীরভাবে মগ্ন বারবনিতা মোহনার রূপসৌন্দর্যে। তার অপার রূপ-যৌবন চণ্ডকের কাছে দুর্বার আকর্ষণের মতো। অথচ সেই মোহনার হাতেই অন্তিমে তার যে পরিণতি, পাঠককে নিঃসন্দেহে তা উদ্বেল ও উৎকণ্ঠ করবে। বস্ত্তত, মোহনা পাল রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে কৈবর্ত-গণতন্ত্রের সংঘাতের কাহিনিমাত্র নয়, এক গভীর মানবিক আখ্যানেরও আধার। দিব্যোক, ভীম, শার্বদেব, কঙ্কণদেব, রামপাল, মথনদেব ও চণ্ডককে ঘিরে এই উপন্যাসের কাহিনি আবর্তিত হলেও এর কেন্দ্রে মোহনীয় মোহনা।