ভাবনাচিন্তা প্রকাশের জন্য মানুষকে অবশ্যই কোনও প্রতীক বা চিহ্নের আশ্রয় নিতে হয়। এই চিহ্নগুলির মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল শব্দ। শব্দ এক প্রকার চিহ্ন। কিন্তু কীসের চিহ্ন? এর উত্তরে বলা যায় : শব্দ কখনও কখনও চিন্তার বিষয়ের চিহ্ন, কখনও কখনও চিন্তন ক্রিয়ার চিহ্ন, কখনও বা শব্দ এ দুটিরই চিহ্ন হিসেবে কাজ করে। শব্দের গুরুত্ব অপরিসীম। যে কোনও ধরনের আলাপ বা আলোচনায় শব্দের সাহায্য নিতেই হয়, না নিলে চলে না। এই গ্রন্থে আলোচিত হয়েছে মানবসভ্যতার বিকাশের ক্ষেত্রে অপরিহার্য সেই শব্দসম্পদের প্রকৃতি ও প্রকার। তবে এ আলোচনা ব্যাকরণবিদের নয়, দার্শনিক যুক্তি বিজ্ঞানীর। শব্দতত্ত্বের আলোচনার আদি পথিকৃৎ অ্যারিস্টটল। এই বইয়ে সেই মহান তাত্ত্বিকের দৃষ্টিপ্রদীপ নিয়েই শব্দজিজ্ঞাসার উত্তর খুঁজেছেন লেখক। এখানে তিনটি অধ্যায়ে বিভক্ত আলোচনার প্রথমেই আছে শব্দ, পদ, নাম ও প্রত্যয়ের সম্বন্ধ ও স্বরূপ নির্ণয়। দ্বিতীয় অধ্যায়ের চর্চা : বিভিন্ন দিক থেকে শব্দের শ্রেণীকরণ। তৃতীয় অধ্যায়ের আলোচ্য এমন সব শব্দ যা বাক্যের বিধেয় বলে গণ্য। আপ্তবাক্য অনুসরণ করে এই অধ্যায়ে দাবি করা হয়েছে, কেবল পাঁচ রকম বাচকই বিধেয়র কাজ করতে পারে। বাংলায় দর্শনচর্চার ক্ষেত্রে ঈর্ষণীয় এই বইটি মূলত, ঋজু, নিরলঙ্কার গদ্যে রচিত অ্যারিস্টটলীয় শব্দতত্ত্বের সহজবোধ্য ও অনুপুঙ্খ ব্যাখ্যান এবং প্রবেশিকা।