মনোজ্ঞ পাঠকের জন্য পাঁচটি দুর্লভ বেশ্যা-বিষয়ক বই পুনর্মুদ্রিত হল আনন্দ-প্রকাশিত এই সংগ্রহে। কলকাতা শহরের নতুন আমোদে বাবুদের আকর্ষণ করার পাশাপাশি মেয়ে হিসাবে নিজেদের অস্তিত্ব প্রতিষ্ঠার লড়াই, সর্বত্রই বেশ্যারা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিলেন উনিশ শতকে। এটাকে যাঁরা বাড়বাড়ন্ত মনে করতেন তাঁদের দৃষ্টিকোণে লেখা ‘বেশ্যানুরক্তি বিষমবিপত্তি’ (১৮৬৩)। ১৮৬৮ সালে ইংরেজ সরকার সংক্রামক রোগ প্রতিরোধের জন্য ‘চোদ্দ আইন’ জারি করেন, সেই আইনে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে বেশ্যারা পেশা চালাতে পারবেন বলা হয়। প্রকাশিত হয় সেকালের সবচেয়ে আলোড়িত বেশ্যা-বিষয়ক আইনের বই ‘বেশ্যা গাইড’ (১৮৬৮), যাকে কেন্দ্র করে এই আইনের পক্ষে-বিপক্ষে ভাগ হয়ে যায় বাঙালি সমাজ। স্বাস্থ্য পরীক্ষার নামে শুরু হয় বেশ্যাদের উপর অত্যাচার, কলকাতা থেকে পালাতে শুরু করেন তাঁরা। এসব নিয়ে রচিত হয় ‘পাঁচালী কমলকলি’ (১৮৭২) এবং ‘বেশ্যাই সর্ব্বনাশের মূল’ (১৮৭৩)। খ্রিস্টধর্মে এর পরিত্রাণের উপায় আছে এমন দৃষ্টিকোণে রচিত হয় ‘এলোকেশী বেশ্যা’ (১৮৭৬)। ‘বেশ্যাপাড়ার পাঁচটি দুর্লভ সংগ্রহ’ গ্রন্থে ধরা থাকল উনিশ শতকের কলকাতা শহরের বিতর্কিত এক অংশের তীব্র ইতিহাস। গ্রন্থটির সম্পাদক মৌ ভট্টাচার্য প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে বাংলায় স্নাতক ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর। আন্তর্জাতিক নারী ও শিশু পাচার নিয়ে পড়াশোনা ও লেখালিখি করেন। চার্লস ওয়ালেস ফেলোশিপ নিয়ে লন্ডনে গিয়েছেন উনিশ শতকের বেশ্যা-বিষয়ক গবেষণার জন্য। এই বিষয়ে সেমিনারে গিয়েছেন স্পেন এবং ফ্রান্স। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনে কর্মরত।