মস্কোয় রেড স্কোয়ারে মে-ডে উপলক্ষে গর্বাচভের ভাষণ ভাষা না বুঝেও শুনতে শুনতে রুমানিয়ার মেয়ে ইলিনার সঙ্গে পরিচয় হয় জিপসিদের জীবন নিয়ে গবেষণারত কলকাতার সুধীনের। তার কিছুদিন পর রুমানিয়ার কমিউনিস্ট শাসক চাওসেস্কু-হত্যার দিনগুলিতে সে-দেশের রোজকার রক্তক্ষয়ী ভাঙচুরের প্রত্যক্ষ বর্ণনায় উত্তপ্ত চিঠিগুলির মধ্যে তার প্রতি সদ্য-তরুণী ইলিনার গভীর ভালোবাসার পরিচয় পেয়ে সুধীন বিচলিত।এদিকে নবতিপর মহা প্রাজ্ঞ, পণ্ডিত, বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র ও পরে অধ্যাপক, সুধীনের পিতৃদেব একমাত্র জীবিত বংশধর সুধীনের জন্য পুঙ্খানুপুঙ্খ এক পাপনামা গোপন ডায়েরিতে লিখে রেখে গেছেন। পড়ে সুধীন বিস্মিত, দিশাহারা। ছিন্নভিন্ন সুধীনের জীবনে হড়কা বানের মতো আছড়ে পড়ল আরও একটি ভূমিকম্পের আঘাত। বোবা-কালা যমুনার সঙ্গে এক ঝড়ের রাতে মিলিত হওয়ায় মেয়েটি গর্ভবতী হয়। বৃদ্ধা অতসীবালা ‘কুমারী পোয়াতি’ মেয়েটিকে ‘বিড়াল পার করা’র মতো নিয়ে কোথায় হারিয়ে যায়। সকলের অগোচরে তাকে খুঁজে ফেরে সুধীন। গভীর ভালোবাসার মধ্যে জীবনকে ছিঁড়েখুঁড়ে দেখা আর সেই সূত্রে হারানো কিছু মূল্যবোধের পুনর্জন্ম- এই হল এ উপন্যাসের প্রাণভোররা। একদিকে কমিউনিজম ভেঙে পড়বার মুখে রাশিয়া, রুমানিয়া, আরেক দিকে কলকাতা, কাশী, সুন্দরবনে ঘটনাজাল ছড়ানো এই উপন্যাস আসলে ভালবাসার এক অবিস্মরণীয় ইতিবৃত্ত।