ঢোলগোবিন্দর খপ্পরে লেখক সুভাষ মুখোপাধ্যায় প্রথম পড়েছিলেন ১৯৮৩ সালে, যখন তাঁর নিজস্ব আত্মদর্শন ঘটে, থুড়ি ‘ঢোলগোবিন্দর আত্মদর্শন’ ঘটে। বেশ কয়েকবছর পরে আবার তিনি পড়েছেন এই বিচিত্র চরিত্রটিকে নিয়ে। কিন্তু আসলে কে এই ‘ঢোলগোবিন্দ’? কী পরিচয় তার? লেখকের নিজের ভাষায়, “নিজেকে নিজের কাছ থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে যে-আমিকে আমি চাক্ষুষ দেখতে পাই, আমার সেই আমিই হল গিয়ে ঢোলগোবিন্দ।” এই ছায়ার মতো সঙ্গে সঙ্গে সেঁটে থাকা চরিত্রটির প্রতি ইদানীং লেখকের মায়া হয়, কারণ এখন তিনকাল গিয়ে এককালে ঠেকেছে বলে অর্বাচীনেরা কেবলই ওর কাছ থেকে পুরনো কথা শুনতে চায় এবং ও নিজেও চায় বলতে।‘ঢোলগোবিন্দর মনে ছিল এই’— এই দ্বিতীয় পর্বের লেখায় তাই তাঁর সেই স্মৃতির ভাঁড়ার থেকে টিনের ট্রাঙ্কে তোলা হলদে আর পোকায়-কাটা পুরনো ফোটোগুলোর সাহায্যে যেন সে আরেকবার সময়, ইতিহাস, ঘটনাপঞ্জী আর ব্যক্তিগত সুখ-দুঃখগুলোকে মিলিয়ে আমাদের সামনে মেলে ধরতে চাইছে তাঁর পুরনো দিনের ঝাপসা স্মৃতি। অনবদ্য ভাষায়, ঋজু, শানিত গদ্যে লেখক সুভাষ মুখোপাধ্যায় শুনিয়েছেন তাঁর আত্মজৈবনিক কাহিনি, তাঁর ভিন্ন স্বাদের অতুলনীয় গ্রন্থে। যাতে উপন্যাসের বিস্তার, গল্পের না-ছোড় টান।